ইসলামের বীজ বপন করতে হবে ইসলামিক পদ্ধতিতে, আব্রাহামের পদ্ধতিতে নয়। মুরসির ত্যাগ থেকে আমরা শিক্ষা নেই নি। এখন পাকিস্তানের অবস্থা থেকেও আমাদের উপলব্ধি হবে না। গণতন্ত্র দিয়ে দ্বীন কায়েম একটা চরম অযৌক্তিক, অবাস্তব, এমনকি চরম পর্যায়ের হাস্যকর চিন্তাধারা। আমেরিকান সেন্ট্রিক বিশ্ব ব্যবস্থায় তার আব্রাহামী তরীকায় তাকে উলটে দেয়া সম্ভব নয়। পশ্চিমার বিপরীতে যে কোন উদাহরণ তৈরি করতে হবে জোর করে, তা কম্যুনিজম, সোস্যালিজম, বা দ্বীনে ইসলাম যা-ই হোক না কেন। মানব সৃষ্টির সময় থেকে যে পদ্ধতিতে ক্ষমতা দখল করা হয়, এবং নিজাম বাস্তবায়ন করা হয়, সে পথ ব্যতীত অন্য কোনো পথে উদ্দেশ্য হাসিল হবে না। চীনা কম্যুনিজম, রাশিয়ার পুতিন, আরবের কিং, বা আফগানিস্তানের আমিরিয়াত আজ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে শুধু মাত্র অতীতের পদ্ধতি অনুসরণ করে, এরা কেউ আব্রাহামিক পদ্ধতিতে উদ্দেশ্য হাসিল করেনি। আমাদের দেশও এখন এক জলজ্যান্ত উদাহরণ।
ইখওয়ানুল মুসলিমিনের কেন্দ্র মিসরে, ৭৫ বছরের সংগ্রামী ইতিহাসে তাদেরকে এক বছরও ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেয়া হয়নি। মুরসি রহিমাহুল্লাহকে আল্লাহ ক্ষমা করুন। জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্র পাকিস্তানে, ৭৫ বছরের সংগ্রামী দল এবার একটি আসন পেতেও ব্যর্থ হয়েছে। পরিশেষে আমিরে জামায়াত পদত্যাগ করেছেন। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা ইমরান, আমেরিকান বিরোধী হওয়ায়, বর্তমান বিশ্বে সব থেকে জনপ্রিয় নেতা হওয়া সত্ত্বেও তাকে ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে না। আব্রাহামিক পদ্ধতিতে ৭৫ বছর কেন ৭৫০ বছরও সংগ্রাম করলে ফলাফল একই হবে। এই কথা আমাদের মাথায় ঢুকবে না। একই কথা খাটে পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জন্য। PDM গঠন করে ইমরানকে উপড়ে ফেলতে তিনিই কাজ করেছেন কিন্তু নতুন নির্বাচনে তেমন কোন অর্জন হয়নি। ইনারা সেকুলারদের ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবেই টিকে থাকবে। নিজেরা কখনো ক্ষমতা পাবে না। বাংলাদেশে আবার নতুন নতুন দল গজিয়েছে, এরা রাজনীতিতে জামায়াতের চাইতে ৩০ বছর পিছিয়ে। একই পথে হেঁটে চলছে তারা। ৩০ বছর পর এরাও জামায়াতের মত ব্যর্থ হবে।
গনতন্ত্র তখন পর্যন্ত ঠিক আছে যতক্ষণ পর্যন্ত আমেরিকা বান্ধব কেউ এতে বিজয় লাভ করে। অন্যথায় গনতন্ত্রসহ তাকে উপড়ে ফেলা হয়। এরপর তারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ভুলে গিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের লড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ১০-২০ বছর সংগ্রাম করে গণতন্ত্র উদ্ধার হয়। অতপর কোনো ফাঁক ফোঁকর পেয়ে ক্ষমতায় গেলে, আবারো উপড়ে ফেলা হয়। এভাবে চক্রাকারে খেলা চলতে থাকে। আমরা গোলোক ধাঁধায় আঁটকে থাকি। আমরা কখনোও কি এটা বুঝব না?