আমার ইচ্ছে করছিল সব বাবা মায়ের কাছে এই কথাগুলো বলতে। সেটা সম্ভব নয় তাই যারা এটা পড়বেন তারা তাদের বাবা মায়ের কাছে পৌঁছে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মনে হচ্ছে লেখাটা একটা পর্যায়ে কঠিন হয়ে যাবে তাই সহজ করার জন্য প্রথমেই একটা গল্প বলি। গল্পটা ১৯৭১ সালের। এক মা আর তার একমাত্র ছেলের গল্প। মুক্তিযুদ্ধের সময় একমাত্র ছেলেকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে গেল। মা অনেক চেষ্টা তদবির করে ছেলেকে দেখতে গেল। ছেলেকে দেখে তার বুকটা হাহাকার করে উঠল। ছেলের উপর অত্যাচারের মর্মস্পর্শী আঘাতে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে মমতাময়ী মা জিজ্ঞেস করল ছেলে কি খাবে। ধরে আনার পর থেকে তাকে কিছুই খেতে দেওয়া হয়নি তাই সে মায়ের কাছে ভাত খেতে চাইল। মা ছুটে আসল বাড়িতে। ছেলের পছন্দের তরকারি আর গরম ভাত নিয়ে আবার ছুটে গেল। কিন্তু ছেলেকে পাওয়া গেলনা। ছেলে মারা গেছে কিংবা মেরে ফেলা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন হল। দেশ স্বাধীনের পর এই মা আরও ৭ বছর বেঁচে ছিলেন। এই সাত বছরে তিনি আর কোনদিন ভাত খান নি। আদরের সন্তান মৃত্যুর আগে তার কাছে ভাত খেতে চেয়ে খেতে পারেনি সেই কষ্ট নিয়ে এই মা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভাত মুখে নেন নি। এই মা আমাদের মা। আপনার আমার বাড়িতেও এরকম এক একজন মা আছেন। আল্লাহ্র কসম… ওজন করে মাপতে পারবেন না এক একজন বাবা মায়ের ভালবাসা, আদর, মমতা। এসবই আমাদের জন্য, আদরের সন্তানদের জন্য তারা বিলিয়ে যায় সারাটা জীবন।
তবে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় সন্তান জন্ম নেওয়ার পর সন্তানের জন্য মহান আল্লাহ অন্তরে যে ভালবাসা, স্নেহ, মমতা দিয়ে দেন তার সবকিছুই আমাদের বাবা মায়েরা অপাত্রে দান করেন। আজকে এই অবস্থায় এসে হয়ত আমি অনেক কিছু নতুন ভাবে চিন্তা করছি—কেমন হওয়া উচিত বাবা মায়েদের দায়িত্ব, কিভাবে বড় করা উচিত ছেলে-মেয়েকে, সন্তানকে জীবনের কি শেখানো উচিত, কোন লক্ষ্যে বড় করা উচিত…… অনেক অনেক কিছু। এই অনেককিছুর কোন সদুত্তর আমাদের বাবা মা দিতে পারেনা বলেই আমার লেখার শিরোনামে বাবা মায়েদের দুর্ভাগা বলতে হল। আমাদের বয়সী ছেলেমেয়েদেরকে যদি দ্বীনি আর জাহেল দুইভাবে ভাগ করি তাহলে খেয়াল করলে দেখবেন এই দ্বীনি ছেলেমেয়েদের কেউই পরিবার থেকে by default দ্বীনের শিক্ষা পায়নি। কিন্তু যারা জাহেল তারা ঠিকই ছোটবেলা থেকেই পরিবার থেকে by default জাহেলি শিক্ষা পেয়েছে। জীবনের একটা পর্যায়ে এসে তাই এই দ্বীনি ছেলেমেয়েরা এখন বাবা মাকে দ্বীন শিক্ষা দিতে মরিয়া আর জাহেল সন্তানের পেছনে এখনো বাবা মায়েরা ছুটে মরছে। তাই বাবা মায়েদের প্রথম দায়িত্ব সন্তানকে দ্বীন শেখানো, আল্লাহ্র সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, ইসলামের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, আখিরাতমুখী জীবনের স্বপ্ন দেখানো। কিন্তু ছেলে মেয়েকে কত ভাল স্কুলে ভর্তি করানো যায়, কত ভাল খাওয়ানো পরানো যায় (হালাল অর হারাম পন্থায় it doesn’t matter) যুগোপযোগী আধুনিক করা যায়, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করা যায়—এসবের পেছনে খেটে মরা আমাদের বাবা মায়েরা কোনদিন বুঝতে পারেনা ছেলেমেয়েকে দ্বীন শিক্ষা দেওয়া হয়নি, মূল্যবোধ- নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়া হয়নি, মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য প্রস্তুত করা হয়নি। আল্লাহ সন্তানকে যে রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন সেই রহমতের যে জবাবদিহি আছে dear বাবা মা। কঠিন জবাবদিহি। রাসুল (সাঃ) ৭ বছর বয়স থেকে সন্তানকে স্বলাতের শিক্ষা দিতে আর ১০ বছর বয়সে আদায় না করলে প্রয়োজনে প্রহার করতে বলেছেন। আর সেখানে আমাদের বাবা মায়েরা সন্তান আরাম করে ঘুমোচ্ছে সেখান থেকে ফজরের জন্য কি করে ডাকে, ছেলে মেয়ের কষ্ট হবে তাই ৩০ রোজা কি করে রাখবে আদরের সন্তান! Amazing!!! জাহান্নামের আগুনের কোন ধারণা আপনাদের আছে?? আছে মহান আল্লাহ্র কঠিন শাস্তির কোন ধারণা?? হজরত লুকমান (আঃ) এর কাছ থেকে ছেলের প্রতি প্রথম নসিহত ছিল, ‘… হে বৎস! আল্লাহ্র সাথে কোন কিছুকে শরীক করোনা, শিরক হচ্ছে অবশ্যই বিরাট যুলুম” [সূরা লুকমান; ১৩]। আর আমাদের বাবা মায়েরা সন্তানের জীবনটাই শুরু করে গলায় তাবিজের নেকলেস ঝুলিয়ে। হযরত লুকমান (আঃ) ছেলেকে বলছেন,
“হে বৎস! তুমি নামাজ কায়েম কর, সৎ কাজের নির্দেশ দাও আর মন্দ কাজ হতে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে ধৈর্যধারণ কর। নিশ্চয় এটা দৃঢ় সংকল্পের কাজ। অহংকারের বশবর্তী হয়ে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা কর না, আর পৃথিবীতে গর্বভরে চলাফেরা কর না, নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। চলাফেরায় সংযত ভাব অবলম্বন কর এবং কণ্ঠস্বর নিচু কর। স্বরের মধ্যে গাধার স্বর সর্বাপেক্ষা শ্রুতিকটু।” [সূরা লুকমানঃ ১৭-১৯]
সুবাহানাল্লাহ! এই কথাগুলো কি কোন বাবা মা কুরআন খুলে তাদের ছেলেমেয়েকে বলে? শেখায়? বোঝায় আল্লাহ্র বাণী? বাজার থেকে সেরা সেরা গাইড বই, সেরা টিচার সন্তানের জন্য বরাদ্দ থাকে but what about the Islamic books? what about introducing children with Islamic sheikhs?? হায়রে দুর্ভাগা বাবা মা এখানেই আপনাদের জবাবদিহিতা। এখানেই আল্লাহ আপনাদের প্রশ্ন করবেন রোজ হাশরের মাঠে। কি উত্তর তৈরি করছেন নিজেদের কোনদিন প্রশ্ন করেছেন??
আমার ছোট চাচি তার ছেলেমেয়েদের রেজাল্ট ভাল না হলে হাত পা বেঁধে মারধর করতেন। সে মারের কিছু দৃশ্য মনে পড়লে এখনো ভয় লাগে। আমি যখন বাড়ি থেকে ঢাকা আসি আমার মা মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে অনেক উপদেশ দেয়—ভাল মত খাওয়া দাওয়া করবি, সমস্যা হলে হল থেকে বের হবি না, পড়াশোনা করবি, চুল লম্বা হয়েছে চুল কেটে ফেলবি ব্লা ব্লা ব্লা। কিন্তু কখনো হযরত লুকমান (আঃ) এর মত কোন উপদেশ থাকেনা। থাকেনা দ্বীনের বিষয়ে কোন জবাবদিহিতা। এটা শুধু আমার ক্ষেত্রে নয় সবাব ক্ষেত্রেই। 3 idiots মুভিতে একটা ডায়লগ মনে আছে—গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে জিজ্ঞেস করেনা, জিজ্ঞেস করে ডাক্তার না ইঞ্জিনিয়ার! ছেলে হলে ইঞ্জিনিয়ার, মেয়ে হলে ডাক্তার। যুগ যুগ ধরে আমাদের বাবা মায়েরা সেকুলারিজমের এই পাঠই মুখস্থ করে এসেছে। সেকুলার সমাজে ছেলে মেয়েকে সেকুলারদের লেন্সে উঁচু জাতের করে বানিয়ে নিতে আমাদের বাবা মায়েরা জীবনের সবকিছু খরচ করে—জান, মাল, সময়, শ্রম সবকিছু! কিন্তু একদিন যে মহান রবের সামনে দাঁড়াতে হবে গো বাবা মা! আল্লাহ আমাদের বাবা মায়েদের দ্বীনের পথে থেকে সন্তানদের দ্বীনের পথে রাখার তৌফিক দান করুন… আমীন।
একদিন অনেক রাতে ক্যাম্পাসে মোবাইলে ওয়াইফাই চালাইতেছি, দেখি মধুর ক্যান্টিনের ওদিক থেকে একটা বাইকে করে একটা ছেলে আর মেয়ে হৈ হৈ করতে করতে আসছে। মেয়েটা চিৎকার করে গাইছে, “চলে গেছ তাতে কি নতুন একটা পেয়েছি… তোমার চেয়ে অনেক ভাল।” ঠিক একই জায়গায় আরেক রাতে এক ছেলের কাঁধে মাথা রেখে এক মেয়ে বসে আছে। মেয়েটির ফোন বেজে উঠল। হয়ত তার মা, হয়ত বাবা ফোন করেছিল। এপাশের কথা শোনে অপাশের প্রশ্নগুলো বুঝে নিলাম, “কোথায়?”, “এই তো রুমে”, “কি করছ?”, “নুডুলস বানাচ্ছি!!” আদরের মেয়ে এত রাতে এক পরপুরুষের গা জড়াজড়ি করে বসে আছে এর বদলে “নুডুলস বানাচ্ছে” এই সান্ত্বনায় বাবা মা হয়ত সেদিন আরামেই ঘুমোতে গেছে প্রতিদিন যেমন যায়। ক্যাম্পাসে কোন এমারজেন্সি কারণে যদি রাতে বের হতে হয় কলাভবনের সামনে দিয়ে, বটতলা, আমতলা ওদিকে কখনো যাইনা। কেমন জানি লাগে। ওরা খারাপ আমি ভাল, ওরা কুকাম করছে আমি নিষ্পাপ—ব্যাপারটা এমন নয়। আমার কেবলই মনে হয় এই ছেলে মেয়েগুলো হয়ত আপনার আমার আদরের ভাইটি নয়, আদরের বোনটি নয়, কিন্তু কারো না কারো তো বোন, কারো না কারো তো ভাই। এরাও তো কোন না কোন দুর্ভাগা বাবা মায়ের সন্তান। দিনের পর দিন এরা নিজেদের সাথে নিজেদের বাবা মায়েদেরও দুর্ভাগা করে। ছোট বেলা থেকে ওটা কর না, এটা করোনা, ওখানে যাবেনা, এখানে এমন করবে টাইপ কারণহীন, যুক্তিহীন শাসনে বড় হওয়া ছেলেমেয়েগুলো যখন ছাড়া পেয়ে দেশের বিদ্যাপীঠগুলোতে আসে এদের অবস্থা হয়ে যায় বাধা গরু হঠাৎ ছাড়া পাওয়ার মত। মন যা চায় তাই করতে যাওয়া এই ছেলে মেয়েগুলোর প্রতিটি কুকামের পেছনে আছে বাবা মায়েদের মূল্যবোধহীন, নৈতিকতাহীন, জীবনবোধহীন—“তোকে জীবনে অনেক বড় হতে হবে”—এই সেকুলার হলফনামার মুখস্থ পাঠ।
মেয়ে বড় হচ্ছে তাকে হিজাব করার তাগিদ রাস্তার মানুষ দিবেনা, এটা বাবা মাকেই দিতে হবে। কিন্তু হিজাবের তাগিদটা বাবা মায়েরা কখন বোঝে?? ছোট বেলা থেকে জিন্স, শর্টস, টাইটপোশাক নিয়ে ঢং ঢং করে বাইরে যাওয়া মেয়েটা একদিন যখন বাইরে থেকে এসে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদে বাবা মা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে, উত্তরে মেয়ে জানাবে, “অমুক অমুক রাস্তায় আজে বাজে কথা বলেছে।” তখনই বাবা মা মার্কেটে ছুটে গিয়ে কিনে আনে একটা কালো বোরখা। মেয়ের নিরাপত্তার বলয়। এই বলয় এতদিন কোথায় ছিল?? উন্মাতাল যৌবনের রঙিন ঘুড়ি ইচ্ছেমত উড়ানো এই মেয়েগুলো তাই পর্দা শিখেনা, শিখে গায়ে একটা কালো বোরখা চাপাতে। এই বোরখা তাকে ছেলে বন্ধুর সাথে মাখামাখি থেকে বিরত রাখতে পারেনা, পার্কের বেন্সে বসে ডলাডলি থেকে বিরত রাখতে পারেনা, সাইবার ক্যাফের একটু আড়ালেই চারপাশের মানুষের সামনেই ছেলে বন্ধুর demand fulfill করতে এই বোরখা নিমিষেই গড়িয়ে পড়ে। এতকিছু আমাদের বাবা মায়েরা জানেনা তারা শুধু জানে মেয়ে নিরাপদ, পর্দার ভেতর আছে। দুর্ভাগা বাবা মায়েদের হুঁশ ফিরে যখন আদরের মেয়েটা ধর্ষিত হয় তার বন্ধুদের হাতেই, আদরের মেয়ের সাথে বাবা মায়েরাও চোখের পানি ফেলে যখন কয়েক মিনিটের একটা ভিডিও কিংবা কয়েকটা স্থিরচিত্র মানুষের মোবাইলে মোবাইলে শোভাবর্ধন করে। কালো বোরখা আপনাদের মেয়েদের রক্ষা করতে পারেনি আপনাদের জবাবদিহিতা থেকেও রক্ষা করতে পারবে না dear বাবা মা। সন্তানের অন্তরে যান, জীবনের শুরু থেকেই তার অন্তরের পরিচর্যা করুন। তাকে শেখান আত্মসম্মানবোধ, তাকে শেখান ইসলামের আখলাক, তাকে শেখান পর্দা—শরীরের আগে মনের!
রমনা পার্কের একটা গেটে লেখা “স্কুল কলেজের ড্রেস পরে পার্কে আপত্তিকর অবস্থান নিষেধ”!! আমি জানি এই লেখাটা আসতে যেতে অনেক বাবা মা ই দেখেছেন কিন্তু তারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন তাদের আদরের ছেলে মেয়েরা প্রতিদিন সকালে এই স্কুল কলেজের ড্রেস পরে “আম্মু আসি”, “আব্বু আসি” বলে যে বেরিয়ে যায় তারা এই পার্কের “আপত্তিকর” অবস্থানকারীদের মাঝে আছে কিনা??? বিষয়টা আলোচনায় আসা দরকার! আলোচনা করলে বিবেচনা আসবে!! আমার অনেক দিনের ইচ্ছে আমি যদি ঢাকা শহরের সব বাবা মায়েদের শুধু দশটা মিনিটের জন্য সন্ধ্যার পর একবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটা চক্কর দেওয়াতে পারতাম!! শুধু দশটা মিনিট!! স্রেফ দশটা মিনিট!! আমাদের বাবা মায়েরা সব বোঝে কিন্তু ছেলে মেয়েদের বয়সের নোংরামি করার প্রবণতাটা বোঝে না!! ছেলে মেয়েকে আধুনিক বানানোর পেছনে জান-মাল-সময় সবকিছু খরচ করতে করতে ভুলেই যায় ছেলে মেয়েকে মূল্যবোধ শেখানো হয়নি, নৈতিকতা শেখানো হয়নি!! এই নৈতিকতাহীন ছেলেরাই একদিন বাবা হয়, এই নৈতিকতাহীন মেয়েরাই একদিন মা হয়!! তারা কি তাদের সন্তানদের কোন আদর্শ শেখাতে পারে?? কোন আত্মসম্মানবোধ?? কোন নৈতিকতা?? না পারেনা!! প্রজন্মের পর প্রজন্মের সময়ের ব্যবধানে এভাবেই আমাদের চারপাশে মানুষের আড়ালে অমানুষ তৈরি হচ্ছে!! এই চক্র চলতে থাকবে! এই চক্র কোনদিন ভাঙবে না!! মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অমানুষের চাষ হবে আমাদের নোংরা সমাজে……
সেদিনের সেই ছেলেটা এখন বড় হয়েছে। তাকে ইসলামের লেবাস নিতে উৎসাহিত করুন, করা উচিত। আমার বাবা মা, বোন যতবার আমার মুখের খোঁচা খোঁচা দাড়ি কেটে ফেলতে বলেছে তার জায়গায় একবারও বলেনি সেটা রেখে দিতে। যৌবনের তাড়নায়, কুফরি ভোগবাদী সমাজের নষ্টামি আর নোংরামি দেখে বড় হওয়া ছেলেদেরকে ঠিক সময়ে আমাদের বাবা মায়েরা মূল্যবোধের সঠিক শিক্ষাটা দিতে পারেনা। মাল্টিমিডিয়া মোবাইল, ল্যাপটপ, পিসিতে, ছোট্ট মেমোরি কার্ডে কী থাকে তার খবর আমাদের বাবা মায়েরা রাখেনা। হঠাৎ করে ছেলে দাড়ি টুপি, ইসলামের কথাবার্তা বলতেছে, কি এক সারাদিন ইসলাম ইসলাম করতেছে—অবস্থা তো কিছুই বোঝা যায়না। তাই ছেলের গতিবিধি লক্ষ্য করতে, কোথায় যায় কি করে, কি বইপত্র পড়ে সেসব নিয়ে বাবা মায়ের চোখের ঘুম হারাম। কিন্তু নুনুর গোরায় প্যান্ট পরা স্পাইক চুলের ইয় ইয় আধুনিক ছেলে বন্ধুদের সাথে কোথায় যায়, পতিতালয়ে যায় নাকি বারে যায় সেদিকে কোন খেয়াল নাই কিংবা খেয়াল রাখার দরকার নাই। দরজা বন্ধ করে “কি জানি করে!!” সন্তানের প্রতি এই careless কেয়ারে রোজ হাশরের মাঠে আপানদেরকে কেউ take care করবেনা dear বাবা মা।
মেয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, গালের চামড়া ঝুলে পড়া শুরু করেছে, ছেলের মাথার চুল পড়ছে সমানে কিন্তু তাদের বিয়ের ব্যাপারে বাবা মা নীরব। সমাজ যে এখনো তাদের বিয়ের লাইসেন্স দেয়নি। এদিকে ছেলে মেয়ে রাস্তা ঘাটে মাখামাখি করে বেড়াচ্ছে, সুযোগ পেলে চারদেয়ালের ভেতরও যাচ্ছে। আবার সংগ্রামী ছেলেমেয়েদের জন্য রাতের শাহবাগও আছে। বাবা মায়েরা আজ ছেলেকে সব দিতে পারে। আইপড, ল্যাপটপ কিনে দিতে পারে। ব্র্যান্ডের শার্ট-প্যান্ট, মাসে মাসে বড় অংকের হাত খরচের টাকা—যখন যা চায়, সেমিস্টারের লাখ লাখ ফি এমনকি এক বন্ধুকে নাকি তার আম্মা ব্র্যান্ডের সিগারেটও কিনে দেয়!! কিন্তু…… গালে দাড়ি, টাখনুর উপর প্যান্ট, মাথায় টুপি নিয়ে ছেলে হাত কচলিয়ে মুখ কাচুমাচু করে বিয়ের কথা বললে বাবা মা মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার বিস্ময় নিয়ে—“বিয়ে করবি তুই!!! বউরে খাওয়াবি কি??”!!! বিষয়টা এমন যেন বিয়ে করে একটা বউ বাড়িতে আনলে সে বাড়ির সব খাবার খেয়ে সাবাড় করে দেবে। বাড়ির আর কারো খাওয়ার কিছু থাকবেনা। বাবা মায়ের পেটে ইসলাম না থাকলে এই হয়। রিজিক যে আল্লাহই দেন এটাও মনে থাকেনা।
স্কুলে পড়ার সময় বিটিভি তে “অলস্কয়ার” নামে একটা নাটক দেখেছিলাম। হালকা যেটা মনে আছে—নাটকে এক মা তার মেয়েকে সব বিষয়ে পারদর্শী করতে চাইলেন। মেয়ের নাচ, গান, পড়াশোনা, ছবি আঁকা, অভিনয় সবকিছুর প্রশিক্ষণ চলত। নাটকের শেষটা মনে নেই কিন্তু সেই নাটক এখনো চলে। আমাদের বাবা মায়েরা সেই নাটক এখনো মঞ্চস্থ করে চলেছেন নিয়মত। জীবনবোধহীন, ইসলামের শিক্ষাবিহীন জীবনের পাঠ নিয়ে ছেলেমেয়েরা নিজেরা অধঃপতনের দিকে যায়, সাথে থাকে আমাদের দুর্ভাগা বাবা মায়েরা। বাবা মায়েরা ছেলে মেয়েকে নাট্যকলা, নৃত্যকলা, শিল্পকলা হাজারটা কলা শিক্ষা দেয় আর শেষ বয়সে এসে ছেলেমেয়েরা বাবা মায়েদের মাঝারি সাইজের একটা কাঁচকলা ধরিয়ে দেয়—বৃদ্ধাশ্রম!! কারা যায় ওখানে?? কারা?? রিকশাওয়ালা, দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষগুলোর বাবা মায়েরা?? না। সেই সব দুর্ভাগা বাবা মায়েদেরই সেখানে জায়গা হয় যারা সারাটা জীবন ছেলে মেয়েদের আধুনিক বানাতে, অনেক বড় করতে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে তাদের নিয়ে ছুটেছেন। দায়িত্ববোধহীন জীবনের শিক্ষা নেওয়া সেইসব ছেলেমেয়েরা শেষ বয়সে যে বাবা মায়েদের দেখভাল করতে হয় সেই ন্যূনতম “দায়িত্ববোধটুকুও” হারিয়ে বসে। আর সেই দুর্ভাগা বাবা মায়েরা বৃদ্ধাশ্রমের চারদেয়ালে বসে এখনো চোখের পানি ফেলে। কেন?? কেন আপনাদের ভালোবাসার এভাবে অপচয় করেন? কেন এভাবে অকাতরে নিজের সবটুকু ভুল পথে বিলিয়ে দেন?? সন্তানের পরীক্ষা—জায়নামাজে পড়ে মা কাঁদছে, রেজাল্ট যেন ভাল হয়! পাশের বাড়ির ভাবীদের আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে মায়েরা জানাচ্ছেন তাদের কষ্টের কথা—ছেলেটা “জঙ্গি!!” হয়ে গেল! চায়ের দোকানে বাবাদের মাথা নিচু হয়ে যায়—ছেলে মেডিক্যালে চান্স পায়নি, A+ পায়নি! Why? ছেলে যখন নামাজ রোজা করেনা তখন কেন আপনাদের চোখের পানি ঝরে না! আদরের মেয়েটা যখন ঢং ঢং করে বেপর্দা হয়ে বাইরে যায় তখন কেন আপনাদের কষ্ট লাগেনা!! ছেলে যখন কয়েক পাতা পড়ে “আমি নাস্তিক” হয়ে আল্লাহ রাসুলকে গালমন্দ করে ফেসবুক স্ট্যাটাস মারে তখন কেন আপনাদের বুক ফেটে যায়না! আধুনিক ছেলেমেয়েদের দামি দামি সার্টিফিকেট, দুইপাতা বিদ্যার চোখরাঙ্গানিতে মাথা নিচু না করে কষে দুইটা থাপ্পড় কেন মারতে পারেন না! কেন পারেন না? আমাদের মাঝে হযরত যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাঃ) এর মাতা সাফ্যিয়ার মত মায়েরা কবে আসবে যিনি ছোটবেলা থেকে তার সন্তানকে মারধর এবং কঠোর অভ্যাসে অভ্যস্ত করতেন এই জন্য যে ছেলে বড় হয়ে ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আজ ইসলামের পথে সন্তান কিছু করতে গেলে বাবা মায়েদের চোখের পানি নাকের পানি এক হয়, কিন্তু তারা ভাবতে পারেনা এ পথে পরাজয় নেই। তারা ভাবতে পারেনা এই সন্তান মরে গেলে ওপারে জান্নাতের দরোজা ধরে তাদের জন্য অপেক্ষা করবে। আমরা ফিলিস্তিনের সেই মায়ের জন্য গর্ববোধ করি যিনি তার সব ছেলেকে ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। যখন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনার সন্তানের শহীদ হওয়ার খবর শুনে আপনি কি করেছিলেন! জবাবে তিনি বলেছিলেন, “আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছিলাম আর সবাইকে চকলেট বিতরণ করেছিলাম।” সুবাহানাল্লাহ। আল্লাহু আকবর। প্রিয় বাবা মায়েরা—জীবন এটাই নয়, আরও কিছু আছে। আরও অনেক কিছু অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য, আপনাদের সন্তানদের জন্য! সেই জীবনের সঞ্চয়ের কথা কোনদিন ভেবেছেন?? সন্তানদের ভাবিয়েছেন??
নিউমার্কেটের ওদিকে যাওয়ার সময় একটা সিডির দোকান পড়ে। ওখানে খুব সকালে কুরআন তেলাওয়াত, ধীরে ধীরে সফট, হার্ড, ডিজে এসব গান চলে। একদিন সন্ধ্যায় যাওয়ার সময় চোখে পড়ল এক বাবা তার পিচ্ছি বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছেন। পিচ্ছি তো পুরাই রক! হার্ড জেলে স্পাইক চুল, হাতে ইয়া মোটা ঘড়ি, থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট, প্যান্টে আবার বিশাল এক চেইন ঝুলানো। ছেলেকে নিয়ে বাবা যেই না ওই দোকানের সামনে এল দোকানের শিডিউল অনুযায়ী তখনকার ডিজে মিক্স গানের তালে ছেলে হঠাৎ প্রফেশনাল ডিজেদের মত হাত পা নাড়ানো, মুখ দিয়ে অদ্ভুত শব্দমালা নিঃসরণ শুরু করল। আশপাশের লোকজনের এই বিনোদনে আমোদিত হতে দেখে ছেলের বাবার চোখ মুখ দেখি গর্বে চিকচিক করে উঠল। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার মনে হল আসলে এই ছেলে তার বাবাকে উপহাস করছে। বলছে—দেখ বাবা তুমি আমাকে কী শিখাচ্ছ, কীভাবে বড় করছ!! চিটাগাঙে আমাদের বাসার পাশে একবার এক বিয়ে হচ্ছিল। সমাজের প্রচলিত নিয়মে জাহেলিয়াতের চূড়ান্ত লেভেল মেয়েদি অনুষ্ঠানে হিন্দি গানের তালে ছেলে মেয়েরা নাচছে। হঠাৎ আমার জানালা দিয়ে একজন বলে উঠল দেখ দেখ কি হচ্ছে! খুব অবাক করা কিছু হচ্ছেনা। বাড়ির ছেলে মেয়েরা এবার তাদের বৃদ্ধ বাবা মাকেও শিলা কি জাওয়ানির তালে কোমর দোলাতে নিয়ে এল। এ যেন আমাদের বাবা মায়েদের চিরায়ত ছবি। আমাদের বাবা মায়েরা সন্তানদের পরিচালিত করেনা সন্তানরাই বাবা মায়েদের পরিচালিত করে। সামনাসামনি একটা বেপর্দা, অর্ধনগ্ন মেয়ে দেখলে এমনিতেই তো অস্বস্তি লাগে কিন্তু টিভির পর্দায় বলিউডের নায়িকাদের শরীর ছেলে মেয়ে সবাইকে নিয়ে হা করে দেখা যায়! দেখা যায় হিন্দি সিরিয়ালের পরকীয়া-প্রেম। কিন্তু এখান থেকে সন্তানকে কী দিচ্ছেন কখনো কি ভেবে দেখেছেন? এখান থেকে সন্তান বাবা মায়েদের সাথে শিলা কি জাওয়ানির তালে কোমর দোলানো ছাড়া আর কিছুই শিখতে পারেনা!
গায়ে যখন অনেকগুলা পিপড়া উঠে মাঝে মাঝে কিছু পিপড়া কামড় বসায়! আমরা তখন পিপড়া মারতে থাকি। কামড় না বসিয়েও অনেক পিপড়া মারা পড়ে! সমাজে কিছু লোক পাপ করে আর কিছু লোক পাপ সহ্য করে! আমাদের সবার মধ্যে আছে গা বাঁচানো নীতি! আমি নামাজ পড়ি, রোজা রাখি তুমি সারাদিন পাপে ডুবে থাক তাতে আমার কি! জীবনটা “আমাকে আমার মত থাকতে দাও” দিয়ে চলেনা! বাড়ির কর্তা আলহাজ অমুক! দাড়ি, টুপি, আতরের সুবাস, হাতে তছবি সব মিলিয়ে “সমাজের ঈমানদার”!! কিন্তু ছেলের বিয়েতে ডিস্কোর আয়োজন ঠিকই হবে! বাড়ির মেয়েরা শিলা, মুন্নি, চাম্মাক চালো, আর দুতি কাটিং পায়জামা পরে ঠিকই ঢং ঢং করে বাইরে যাবে! কিছু বলতে গেলে, “ছেলেরা কত্তেছে, এসবই নাকি এখন চলে” কথায় পার পাওয়া যাবে না হাজী সাহেব! ইন্না বাতশা রাব্বিকা লা’শাদিদ—নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও অত্যন্ত কঠোর!
পিপড়া কামড়াবে কয়েকটা কিন্তু পিষে মারা হবে সবাইকেই! ইতিহাসের গজবগুলো বইয়ের পাতার কালো অক্ষর নয়, এগুলো আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত! গজব নিজের উপর না আসার আগে জানি কারোই ঘুম ভাঙবে না!!
আপনারা যারা এই লেখাটা পড়ছেন সবাই হয়ত বাবা মা নয়, কিন্তু আপনারা কোন না কোন বাবা মায়ের আদরের সন্তান। একদিন আপনারাও বাবা মা হবেন। আপনাদেরও ছেলে মেয়ে থাকবে। একটা কথা মনে রাখবেন আপনার বাবা মায়ের সাথে আপনার কিংবা আপনার সন্তানের সাথে আপনার সম্পর্কটা দেওয়া আর নেওয়ার। It’s all about give and take. কোন অর্থে?? আপনি আপনার সন্তানকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচালে আপনার সন্তানও আপনাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাবে। আল্লাহ বলছেন,
“হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে আর তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে মোতায়েন আছে পাষাণ হৃদয় কঠোর স্বভাব ফেরেশতা। আল্লাহ যা আদেশ করেন, তা তারা অমান্য করেনা, আর তারা তাই করে, তাদেরকে যা করার আদেশ দেওয়া হয়।" [সুরা আত তাহরিমঃ ৬]
যাদের বাবা মা এখনো বেঁচে আছে আল্লাহর কসম আপনি হয়ত এখনো বুঝতে পারছেন না কত বড় নেয়ামত আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য এখনো রেখে দিয়েছেন। আল্লাহর দোহাই লাগে নিজেদের বাবা মায়েদের দুর্ভাগা করবেন না। আপনার কারণে যেন আপনার বাবা মায়ের আখিরাত কঠিন হয়ে না যায়। আপনি হয়ত জানেন না আপনার বাবা মা সারাজীবন আপনার জন্য চোখের পানি ফেলেছে। আপনি তো শুধু আপনার কষ্টের সময়েই কেঁদেছেন কিন্তু আপনার বাবা মা আপনার কষ্ট, আনন্দ সব মুহূর্তেই কেঁদেছে। আপনার হয়ত মনে নেই, সেই জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত আপনার গালে যতটা ভালোবাসা আর মমতার চুম্বন পড়েছে তার সবগুলোই আপনার বাবা মায়ের। আপনি হয়ত ভুলে যেতে পারেন আপনার মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দিতে, সুন্দর জামাটা কিনে দিতে, ভাল স্কুলে পড়াতে আপনার বাবা মায়ের কষ্ট।
জন্মের সময়ের মায়ের কষ্টের তীব্রতা আপনি জানেন না। জানতে চান কত তীব্র সেই কষ্ট?? সন্তান জন্মের সময় একজন মা যে কষ্ট সহ্য করেন সেটা ২০ টা হাড় একসাথে ভেঙ্গে ফেললে যে কষ্ট তার সমান। সুবাহানাল্লাহ!!! কখনো কোন সন্তান কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে তার মা তাকে বলেছে—তোকে জন্ম দেওয়ার সময় আমার এত কষ্ট হয়েছিল!! কখনো কোন সন্তান কি বলতে পারবে তার বাবা তাকে বলেছে—তোর ভরণ পোষণের জন্য তার কীরকম কষ্ট হয়েছে। এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার অপমান যেন কোন সন্তান না করে। কোন সন্তানের জন্য যেন কোন বাবা মাকে দুর্ভাগা হতে না হয়। আল্লাহর কসম, পিঠের চামড়া জুতা বানিয়ে পরতে দিলেও বাবা মায়ের ঋণ কোন সন্তান শোধ করতে পারবেনা। এই ঋণের প্রতিদান দিতে পারেন শুধুমাত্র মহান আল্লাহ। যেদিন সন্তান অনন্ত জান্নাতের দরোজা ধরে হাত বাড়িয়ে বাবা মাকে ডাকবে প্রতিদান হবে সেদিন। যেদিন সন্তানের জন্য আল্লাহর কাছে বাবা মায়ের জবাবদিহিতা সহজ হয়ে যাবে প্রতিদান হবে সেদিন। বাবা মায়ের প্রতি ভালোবাসা স্কুলের রচনা প্রতিযোগিতা নয়, ফেসবুকের আবেগঘন স্ট্যাটাস নয়, বলিউড-হলিউডের চোখের পানি নাকের পানি এক করা ন্যাকামু নয়। এই ভালোবাসা যদি সত্যিই অন্তরে লালন করে থাকেন তাহলে বাবা মাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচান। গাড়ি-বাড়ি-ধন সম্পদের আভিজাত্য নয় মনের ভেতর শুধু এই স্বপ্নটাই বুনতে থাকুন একদিন…… কোন একদিন আপনার বাবা মা কে নিয়েই জান্নাতের দরোজায় হাত রাখবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সব বাবা মাকে এবং সব সন্তানকে এই স্বপ্ন নিয়ে দ্বীন ইসলামের আলোকে জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দিন… আমীন ইয়া রব আমীন।