ইসলাম গ্রহণের পরদিন।
আবু জাহেলের দরজায় উমার রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহু। সজোরে থাবা পড়লো দরজায়। ভেতর থেকে বেরিয়ে জিজ্ঞাসু আবু জাহেল - কি মনে করে?
দৃঢ় কন্ঠে মক্কার অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির সামনে দাঁড়িয়ে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহু ঘোষণা করলেন - "আপনাকে এ কথা জানাতে এসেছি যে, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল মুহাম্মাদের ﷺ প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর নিয়ে আসা বিধান মেনে নিয়েছি।"
এ কথা শোনামাত্র সজোরে মুখের উপর দরজা বন্ধ করে ভেতর থেকে আবু জাহেল গুঙিয়ে উঠল - "আল্লাহ তোকে কলংকিত করুক এবং যে খবর নিয়ে তুই এসছিস তাকেও কলংকিত করুক।"
আল্লাহ সুবহানাহুতা'য়ালা আল 'আদল - পরিপূর্ণ ন্যায়বিচারক। ন্যায়বিচার তিনি করেছেন। তিনি কলংকিত উমারকে করেননি, করেছেন আবু জাহেলকে। ১৪০০ বছর থেকে কিয়ামাত পর্যন্ত তাকে মানুষ ডেকে যাবে আবু জাহেল অর্থাৎ মূর্খের আব্বা বলে। আর উমারকে ডেকে যাবে 'ফারুক' নামে।
উমার রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর ইসলাম গ্রহণের আগ পর্যন্ত মক্কায় সালাত তো বহুত দূর কি বাত ঈমানের ঘোষণাটা পর্যন্ত প্রকাশ্যে দিতে কেউ সাহস করতো না, যদিও হামযা রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর মতো সাহসী ব্যক্তিত্বও সেসময় তাঁদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। উমার ছিলেন প্রবল একরোখা ও ফোকাসড একজন মানুষ। প্রকাশ্য ইসলামের ঘোষণা দিয়েই তিনি বসে থাকবেন এটা ভাবার কোন কারণ নেই। তিনি ঘোষণা দেওয়ার পর লোকজন, দলবল নিয়ে কাবায় চলে গেলেন। চারপাশে কিলবিল করতে থাকা ভয়াবহ সব কাফিরদের নাকের ডগায় বসে সালাত আদায় করে ছাড়লেন।
পুরানো চাল নাকি ভাতে বাড়ে। আর আমার বাড়ে শিউরে উঠার পরিমাণ। যতবার উমার রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা আর সাহসিকতার পুরানো গল্পগুলো শুনি ততবার। নিজের মাঝে একই সাথে চাপা উত্তেজনা আর আফসোস অনুভব করতে থাকি।
ইসস! যদি একটু তাঁর মতো নায়ক টাইপ হতে পারতাম। আমাকে দেখেও যদি শয়তান রাস্তা বদলে পালাতো। শ'খানেক যুদ্ধ জয় করতে পারতাম নিমিষেই। কাফির নেতাদের সামনে বুকটা ফুলিয়ে বলে আসতে পারতাম - "মদিনা চলছি। কেউ যদি তার মাকে পুত্র শোক দিতে চায় সে যেন এ উপত্যকার অপর প্রান্তে আমার মুখোমুখি হয়।"
ইসস যদি পারতাম!