পাশ্চাত্য দুনিয়া যখন আমাদের প্রশ্ন করে, পুরো ইসলামী ইতিহাসে তোমরা নিউটনের মত বিজ্ঞানী দেখাও তো পারলে? এর পাল্টা উত্তরে আমরা ফারাবী, ইবনে হাইসাম এবং ইবনে হাইয়ানদের দেখাতে যাব না। বরং আমরা সুফিয়ান সাওরী, আব্দুল ক্বাদের জ্বিলানীদের মত ব্যক্তিদের দেখাব। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন,তাবে তাবেয়ীন, আয়িম্মায়ে কেরাম সহ সালাফদের পবিত্র জামাতের কাউকে উপস্থাপন করে বলব তোমরা পারলে পাশ্চাত্যের ইতিহাসে এমন কাউকে দেখাও? ইবনে হাইসাম আর ফারাবী আমাদের লোক। তবে বুঝতে হবে, তারা যেই কারণে প্রসিদ্ধ- সেই অঙ্গনটা আমাদের উন্নতির মাপকাঠি না। আমরা অন্য আলোচনায় তাদের প্রসঙ্গ টানতে পারি। তবে এই প্রশ্নের উত্তরে না। কারণ এই প্রশ্ন শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠির, এই প্রশ্ন আত্মোউন্নয়নের সিঁড়ির, এই প্রশ্ন সভ্যতার মাপকাঠির।
পাশ্চাত্য এই প্রশ্নটা এজন্যই করে যে, তাদের কাছে বস্তুবাদী উন্নতিই সবকিছু। কিন্তু আমাদের উন্নতি ও শ্রেষ্ঠত্বের ময়দান ভিন্ন। পাশ্চাত্য আর আর ইসলামের কাজের জায়গা আলাদা। এজন্য তাদের এরকম প্রশ্নে ফারাবী আর ইবনে হায়সামদের দেখানোর অর্থ হল, নিজেদের উন্নতির সর্বোচ্চ মাকাম নিয়ে হীনমন্নতায় ভোগা।নিজেদের আত্মোন্নতির সিঁড়িকে তুচ্ছ ভাবা। সর্বোপরি আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগা। আমাদের কাছে চির উন্নত ও আদর্শ ব্যক্তিত্ব হলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবায়ে কেরামসহ সালাফ ও পূর্বসূরিদের মহান পবিত্র জামাত। আমাদের সভ্যতার প্রথম কথা হল, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক এবং তাকওয়া।
এমন পরাজিত মানসিকতার কারণেই আমাদের শিশু,তরুণ ও যুবকরা সাহাবায়ে কেরামের মত হতে চায় না। সালাফ ও পূর্বসূরিদের জীবন বৃত্তান্ত থেকে অনুপ্রাণিত হয় না। তাঁদের নিয়ে গর্ববোধ করতে পারে না। কারণ তাঁদের চিন্তার কেব্দ্রবিন্দুতে মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম পার্থিব উন্নয়ন ও প্রতিভার কিছু চরিত্র বসবাস করে। আমাদের এমন পরাজিত মানসিকতা প্রজন্মের কেবলা ভুলিয়ে দিচ্ছে। পাশ্চাত্য চরিত্রকে তাদের রঙিন স্বপ্নে পরিণত করছে। আত্মপরিচয় ভোলা এক জাতি!
08/01/2020, 16:09