হে প্রিয়
যদি বলি তুমি আশায় বুক বেঁধে থাকো
অল্প একটু পানির জন্য
হাজরার ছোটাছুটি কল্পনা করে দেখো
তপ্ত রোঁদে ধূ ধূ মরুভূমি,
কপাল বেয়ে নামা ঘামের ফোঁটা
বিশ্রামহীম ছুটে চলা
একটু পানির আশায়…
আমি তো তোমায় মনে করিয়ে দিতে চাই
পিতা ইবরাহীমের হৃদয়ের ব্যথা চেপে
বেরিয়ে আসা ঈমানের দৃঢ় পদযুগল
আদরের ছেলের চোখে চোখ রেখে
নশ্বর এই ভালোবাসার সাথে
মহান রবের অবিনশ্বর ভালোবাসার সওদা।
অনুভব করে দেখেছো ইউসুফের হৃদয়ের সেই ব্যাথাতুর বেদনা?
নিজের রক্ত যেদিন তাঁকে ছুড়ে ফেলেছিলো আবর্জনার স্তূপে
বিশ্বাসঘাতকতার সে কি কষ্ট বুকে চেপে!
কিংবা ভেবে দেখেছো তিমির পেটে,
ভয়ঙ্কর অন্ধকারে ইউনুসের একা দিনগুলো
কল্পনা করে দেখো..
সুবিশাল সমুদ্রের সামনে তোমার পদযুগল
বুঝবে ফির'আউনের কবল থেকে পালিয়ে বাঁচা মুসার যাত্রা
কিংবা এক দুঃখিনী নারী আসিয়া
নিজের অত্যাচারী স্বামীর সাথে থেকেও
এক আল্লাহর বান্দী
মহান রবের নিকটে,
জান্নাতে থাকতে চাওয়ার সেই অশ্রুমাখা আর্তি
বিলালের চিৎকার,
অঙ্গারে ঝলসে যাওয়া চামড়া
তবুও এক আহাদ আহাদ ছাড়া কিছুই শোনেনি তারা
যার আহবানে সাহাবারা তাদের রবের কাছে হাজিরা দিতো।
একটু ভেবে দেখো…
প্রিয় নবী ক্লান্ত, ক্ষত বিক্ষত শরীরটা টেনে নিয়ে যাচ্ছেন
মস্তক বেয়ে নেমে আসা রক্তের স্রোত বয়ে চলেছে
আহা…
কিংবা রবের সামনে রুকুরত প্রিয় নবীর পিঠে উটের নাড়িভুঁড়ী
যদি তুমি অনুভব করতে পারো
যদি চোখ বন্ধ করে একবার কল্পনায় বুঝে নিতে পারো
তুমি জানবে,
হাজরা আর ইসমাঈলের তৃষ্ণার্ত হৃদয় হার মানেনি
ইসমাঈলও তলোয়ারের নিচে অক্ষত ছিলো
কুয়োয় পড়েও ইউসুফের হাতে এসেছে মিশরের শাসনভার
তিমির পেটেও আল্লাহ ইউনুসকে ভুলে যাননি
মুসা আর তার অনুসারীরা সমুদ্রের মাঝেও পথ খুঁজে পেয়েছে
বিলাল হয়েছে সম্মানিত
আর প্রিয় নবীর দীন হয়েছে প্রস্ফুটিত
কেননা, হে প্রিয়
আশা মানে সবকিছু থেকে অভ্যাহতি নেওয়া নয়
আশা মানে টিকে থাকা,
আসমানী ফয়সালার জন্য
দাঁতে দাঁত চেপে জমে থাকা, অবিচল।
"হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার।" [সূরা আলে ইমরানঃ ২০০]
কবিতা: হে প্রিয়…
২৯ জানুয়ারি, ২০১৮