একটা মোটা দাগের কৌতুকে পড়েছিলাম ক্রিকেটে থাই গার্ডের ব্যবহার শুরুর প্রায় ১০০ বছর পর হেলমেট ব্যবহার শুরু হয়।
কৌতুকটা ছিল পুরুষ মানুষদের নিয়ে - তারা কোনটাকে গুরুত্ব দেয় এটা নিয়ে একটা প্রাপ্তবয়ষ্ক ইশারা ছিল।
যে কথাগুলো অনেকদিন ধরে বলব ভাবছি তা সর্বসমক্ষে বলা লজ্জার, কিন্তু কিছু ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লজ্জার সীমানায় এসে হলেও মানুষকে কিছু শিক্ষা দিয়েছেন।*
উমার রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু তার মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, স্বামীকে ছাড়া তার স্ত্রী কয়দিন থাকতে পারে। উত্তর শুনেছিলেন চার মাস। এরপর তিনি নিয়ম করে দিয়েছিলেন, মুসলিম মুজাহিদদের চার মাসের বেশি জিহাদের ময়দানে রাখা যাবে না।
উমার পুরুষদের জিজ্ঞেস করেননি। আমাকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতাম, একজন পুরুষ তার স্ত্রী ছাড়া চার দিনের বেশি ভালো থাকতে পারে না।
আমি যে একটা বছর অ্যামেরিকায় ছিলাম স্ত্রীকে রেখে, কীভাবে ছিলাম সেটা আল্লাহ ভালো জানেন।
স্ত্রীকে ছাড়া ভালো থাকতে পারে না কেন? কারণ, আল্লাহ পুরুষকে সেভাবে বানিয়েছেন। চাহিদা দিয়ে, কামনা দিয়ে।
আমাদের সমাজের স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য যতটা ব্যস্ত, মনের ক্ষুধা এবং দৈহিক ক্ষুধা মেটানোর জন্য ততটাই অতৎপর।
অন্তত, আমার কাছে আসা ইনবক্সে ভাইদের অনুযোগে তাই মনে হয়।
মনের ক্ষুধা সংসারের আলাপে মেটে না। ডাল শেষ, তেল লাগবে - এগুলো সম্পর্কের উন্নতি করে না।
মনের ক্ষুধা মেটে যখন কোনো পুরুষ যে ব্যাপারে আগ্রহী সে ব্যাপারে তার সাথে আলাপ করলে। আমি বিজ্ঞান ভালোবাসি। বিজ্ঞানের নতুন একটা আবিষ্কার নিয়ে আমার সাথে আমার স্ত্রী কথা বললে আমার ভালো লাগে।
আমার স্ত্রীর বিজ্ঞান ভালো না লাগলে?
বোনেরা, কিছু একটা খুঁজে বের করুন যেটাতে আপনার আর আপনার স্বামীর কমন আগ্রহ আছে।
আর থাকল দেহের ক্ষুধা।
এই ক্ষুধা সত্য। পেটের ক্ষুধার মতই সত্য। যদিও পেটের ক্ষুধার কথা কেউ বলতে বা শুনতে লজ্জা পায় না, কিন্তু এই ক্ষুধাকে পায়।
পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা দেশে বেশ্যালয় আছে। কেন?
বেশ্যালয়ে বিবাহিত পুরুষরাও যায়। কেন?
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা চারটা পর্যন্ত বিয়ের বিধান দিয়েছেন এর একটা কারণ পুরুষদের দৈহিক ক্ষুধা অনেক বেশি আগ্রাসী।
এবং অধিকাংশ বিবাহিত পুরুষ তার স্ত্রীকে তার চাহিদার কথা বলতে লজ্জা পায়। প্রতিনিয়ত বলা তো আরো মুশকিল।
এই অবদমিত চাহিদার হালাল বহির্প্রকাশ বাধাপ্রাপ্ত হলে পুরুষেরা ছোটে পর্নের দিকে। এখন মোবাইলে বিছানায় শুয়েও সারা দুনিয়ার নোংরামি ঘুরে আসা যায়।
স্ত্রী তার মতো ঘুমে আছেন, স্বামী পাপাচারে মগ্ন।
পরকীয়া, ধর্ষণ - প্রায় সব বিকৃত কামাচারের পেছনে হালাল স্ত্রীসঙ্গ দুর্লভ হওয়াটা একটা বড় কারণ।
স্ত্রী বুঝতে পারেন না স্বামী কেন রেগে থাকেন। তিনি বুঝতে পারেন না, সংসারে অশান্তি। এই দম্পতিকে তাদের শারীরিক সম্পর্কের কথা জিজ্ঞেস করে দেখেন।
আমি পুরুষদের সবর করতে না পেরে পাপে জড়ানোকে জাস্টিফাই করছি না। একজন পুরুষ হিসেবে আসলে পুরুষেরা কী চিন্তা করে, তাদের কী চাহিদা - সেটা বোনদের সামনে তুলে ধরলাম, লজ্জার মাথা খেয়েই।
সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে।
রমণী শব্দের উৎস বিশ্লেষণে যাব না, তবে বোনেরা একটু চিন্তা করে দেখবেন। কথাটা সত্য। আমাকে গালমন্দ করতে পারেন - তবে আপনাদের ভালোর জন্যই বলছি।
আর ভাইয়েরা, আল্লাহ আমাদের যে প্রবৃত্তি দিয়েছেন তা নিয়ন্ত্রণ করার নামই তাকওয়া - আল্লাহ সম্পর্কে সচেতন থাকা। যে আল্লাহর নামে আমরা আমাদের স্ত্রীদের ঘরে এনেছি, তাদেরও মানসিক এবং শারীরিক অধিকার আছে। সেটার দিকে নজর রাখা আমাদের কর্তব্য।
আমরা যেন আমাদের সঙ্গী-সঙ্গিনীদের সীমাবদ্ধতাটুকু উপেক্ষা করে তাদেরকে তাদের প্রাপ্যটুকুর চেয়েও বেশি কিছু দেয়ার চেষ্টা করি। তাদের পাপ থেকে বাঁচাই এবং নিজেও বাঁচি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।
Tuesday, 9 January 2018 at 07:13