“তিনি আমাকে পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার আগে দেখেছিলেন” - সহিহ বুখারী
ইফকের ঘটনা বলতে গিয়ে আয়েশা (রা) এ কথাটি বলেছিলেন। যখন কাফেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি গাছের নীচে ঘুমিয়ে পড়লেন, সফওয়ান (রা) তাকে দেখে চিনে ফেলেছিলেন।
তিনি আয়েশা (রা) কে কীভাবে চিনলেন? অথচ একজন গাইরে মাহরাম পুরুষের তো কোন মহিলাকে দেখে চিনার কথা না! শ্রোতাদের মনে এ প্রশ্ন উদয় হতে পারে। এজন্য আয়েশা (রা) সেটা স্পষ্ট করে দিলেন, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার আগে আয়েশা (রা) কে তিনি দেখেছিলেন। তাই চিনতে পেরেছেন।
পর্দার বিধান নাযিলের আগে এবং পরে, চেহারা যদি পর্দার ভেতর না থেকে থাকে, বরং রাসুলের যুগে মুখ খোলা রাখাটাই যদি সাধারণ প্র্যাকটিস হয়ে থাকে, আয়েশা রা এর এই বক্তব্যের কী অর্থ দাঁড় করাবেন আপনি? যদি চেহারা পর্দার মধ্যে না হয়, তাহলে আয়িশা (রা) তো সাধারনভাবে বলে দিতেন, চেহারা দেখে চিনেছে। এত ক্ল্যারিফিকেশনের কী প্রয়োজন ছিল?
জায়েজ নাজায়েজ দিয়ে বিবেচনা না করে, পর্দা সেভাবেই করুন, যেভাবে রাসুলের যুগে রাসুলের স্ত্রীরা করেছেন। সৌন্দর্যকে নতুন রূপ দেয়ার জন্য নয়, সৌন্দর্য ঢাকার জন্য করুন। যে হিজাব পড়ার পর মানুষ আপনার রুপের প্রশংসা করে, নিশ্চিত জানুন এটা ইসলামের সেই হিজাব নয়, যা আল্লাহর রাসুলের সম্মানিতা কন্যাগন এবং অন্যান্য সাহাবিরা করেছেন। তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মেয়ে ফাতিমা রা, মৃত্যুর পরও নিজেকে ঢেকে রাখার ব্যাপারে এতটা যত্নবান ছিলেন, অসিয়ত করে গিয়েছিলেন যেন তাকে রাতের অন্ধকারে দাফন করা হয়। মিলিয়ে দেখুন, তাদের হিজাবের সাথে আপনার হিজাব, তাদের নিয়তের সাথে আপনার নিয়ত।
পর্দা করার কারনে যদি কিছু কাছের মানুষ দূরে সরে যায়, তাহলে এর কারনেই কিছু দুরের মানুষ কাছে আসবে। যদি এর কারনে বিয়ে আটকে যায়, তাহলে এর কারনেই বিয়ে হবে। যদি চাকরি চলে যায়, নিশ্চয়ই একমাত্র আল্লাহ তা'আলাই রিযিক দাতা। ভরসা রাখুন শুধু তাঁরই উপর।
পর্দা করলে কেউ নাজেহাল হয় না। সেই মহান সত্ত্বা যদি আপনাকে নাজেহাল করতে চান, আপনি নিস্তার পাবেন না কোনভাবেই। তিনি যদি আপনাকে বাঁচাতে চান, পুরো পৃথিবী এক হলেও আপনার কোন ক্ষতি হবে না।
এই দুনিয়া আমাদের আবাস নয়। এখানকার দুঃখ কষ্টও চিরস্থায়ী নয়। যে মানুষগুলো আজ হাসে, ঠাট্টা করে, তারাও কবরে যাবে আপনিও যাবেন। আল্লাহ চাইলে, এই নিকাব আপনার দিকে ধেয়ে আসা আল্লাহর বিশাল আযাবকে রুখে দিবে। হয়তো বলার মত যুক্তি পাবেন-
আল্লাহ! সেই চেহারাকে আপনার আযাব থেকে দুরে রাখুন, যা আপনার ভয়ে ঢেকে রাখা হত।